কিভাবে স্কুল চালু করবেন

আপনি আপনার স্থানীয় ধর্মসভা কিংবা সম্প্রদায়ে বাইবেলের আলোকে স্কুল চালু করতে আগ্রহী? শুরু করতে এই নিন কিছু ভাবনা!


আমার স্থানীয় ধর্মসভা কিংবা সম্প্রদায়ে কেন বাইবেলের আলোকে স্কুল চালু করবো?

বাইবেলের আলোকে শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ গতিতে অধ্যয়ন করতে সক্ষম হবে এমন উপায়ে ডিজাইনকৃত। একই সাথে অনেকেই গ্রুপ পরিবেশে এক সাথে পড়া থেকে উপকার পায়। সহকারিতা ও অন্তরঙ্গতা শুধু মাত্র হিতকর নয়, দলবদ্ধ গতিশীলতা শিক্ষার্থীদের এমনভাবে সামনে এগিয়ে যেতে উৎসাহী এবং উদ্বুদ্ধ করে যা পৃথক অধ্যয়ন করে না। বাইবেলের আলোকে স্কুল স্থাপন করা হলে এমন সব পার্থক্য নিশ্চিত করবে সেই মানব উপাদানটি পেশ করতে পারে।


স্কুল স্থাপন করার বিভিন্ন মডেলসমূহ কি?

  • কোর্স প্রতি ৫০ দিন মেয়াদের নিয়মিত গতিতে পবিত্র বাইবেল সম্পন্ন করতে ইচ্ছুক গীর্জার সদস্যদের জন্য “স্বাভাবিক গতির স্কুল” স্থাপন করুন। আরো অধিক তথ্যের জন্য “সেমিস্টার পদ্ধতিতে অধ্যয়ন” পৃষ্ঠা দেখুন।
  • দু’ থেকে তিন বছর মেয়াদের জন্য পবিত্র বাইবেল অধ্যয়নে সম্পূর্ণ নিবেদিত হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য “পূর্ণকাল স্কুল” চালু করুন। কোর্স প্রতি ১৪ দিন গতিতে অগ্রসর হলে শিক্ষার্থীরা দু’বছর তিন মাসের মতো কম সময়ের মধ্যে পবিত্র বাইবেলের প্রতিটি গ্রন্থ পূর্ণাঙ্গভাবে অধ্যয়ন সম্পন্ন করতে পারবে। এর জন্য শিক্ষার্থীর পক্ষ হতে আত্মোৎস্বর্গের প্রয়োজন, এবং প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য দৈনন্দিন খরচের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
  • “প্রয়োজন অনুসারে” কোর্স চালু করুন। কোন সদস্য হিব্রু ভাষায় পবিত্র বাইবেল শেখাতে প্রস্তুত হচ্ছেন? তাঁকে আমাদের হিব্রু কোর্সে ভর্তি করুন এবং ক্লাসের পাশাপাশি আরো গভীরভাবে অধ্যয়নের জন্য তাঁর ক্লাসের সদস্যদের এনে নিবন্ধন করাতে উদ্বুদ্ধ করুন! ধর্মসভার সদস্যগণ কি নতুন নেতৃবৃন্দ ধার্য করতে যাচ্ছেন? সদস্যবৃন্দকে আমাদের ১ ও ২ তিমথীয় এবং তিতাসীয় গ্রন্থসমূহের ওপর কোর্সগুলো নিতে উৎসাহিত করুন। আপনি নওখ্রিষ্টানদের সারা জীবন ধরে বাইবেল অধ্যয়নের অভ্যাস প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে চান? আমাদের প্রস্তুতকৃত যীশুখ্রিষ্টের জীবনী ও প্রেরিত গ্রন্থের ওপর কোর্সসমূহ সূচনার জন্য খুবই উপযোগী।
  • বিস্তারিতভাবে বাইবেল অধ্যয়নের জন্য তৈরি “নারীদের ক্লাসে” তা নির্ধারিত এ মেয়াদের জন্য ব্যবহার করুন।
  • গ্রীষ্মের ছুটিতে তা “উচ্চমাধ্যমিক গ্রুপে” ব্যবহার করুন, হয়তো কোন বান্ধবসুলভ প্রতিযোগিতা কিংবা নির্দিষ্ট কোন গ্রেড নিয়ে পাস করতে প্রেরণা দেবে এমন কিছুর মিশ্রণে। এ বয়সের জন্য আমরা গসপেল ও প্রেরিত-এর ওপর আমাদের কোর্সসমূহ সুপারিশ করছি।
  • বয়স্ক ছেলেমেয়ে প্রতিপালনকারী “পরিবার ও দম্পতি“গণ একসাথে কোর্সগুলো নিতে পারেন এবং অধ্যয়ন ও আলোচনার জন্য প্রায়শই একত্রিত হতে পারেন।
  • এটিকে স্থানীয় ধর্মপ্রচারের জন্য যোগাযোগের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করুন। যারা প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন কিংবা কোন বিশিষ্ট উপাসনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগ্রহী থাকেন না, দেখা যায় তাঁরা অনেক সময় কোন “অধ্যয়ন গ্রুপ”-এর অংশ হতে পেরে খুশি হন। এভাবে তাঁরা কোর্সে শেখানো বিষয়গুলো শিখবে, বৈঠকের সময় আলোচনায় অংশ নেবে এবং অন্যদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করবে, যা তাঁকে আরো অধিক গবেষণায় প্রণোদিত করতে পারে। এলাকার এমন লোকজনের সন্ধান করুন যারা পবিত্র বাইবেলের ওপর গভীর কোর্সসমূহ অধ্যয়ন করতে আগ্রহী হবেন। বিশিষ্ট কোন গীর্জায় আসতে উদ্বিগ্ন হতে পারে এমন লোকজনকে উৎসাহিত করতে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এমন “নিরপেক্ষ” স্থানে বৈঠকগুলো করার কথা বিবেচনা করুন।
  • এ কোর্সগুলো মিশনারি ক্ষেত্রে চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় প্রশিক্ষণ খুব বিরল কিংবা একেবারেই নেই, কিন্তু এ কার্যক্রমটি সারা বিশ্বে ২৩টি ভাষায় বিদ্যমান। আমাদের কোর্সসমূহে প্রদত্ত পবিত্র বাইবেলের বিস্তারিত অধ্যয়নের মাধ্যমে যুব ধর্মসভাগুলো গভীরভাবে উপকারিত হবে। স্থানীয় স্কুল প্রতিষ্ঠা, বিশেষ করে, তাদের ভালো পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলায় প্রেরণা যোগাতে সহায়তা করবে। আপনার সমর্থিত মিশনারিদের এ কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে ভুলবেন না!
  • আমাদের কোর্সসমূহ অন্যান্য কার্যক্রমের সাথে সম্পূরক পাঠ্যক্রম হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, বিদেশের কোন ধর্মপ্রচারক প্রশিক্ষণী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেটির পূর্ণ জ্ঞানার্জন অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের আমাদের কোর্সগুলোর কয়েকটি নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

কিভাবে শুরু করবো?

বাইবেলের আলোকে’র সাথে পবিত্র বাইবেল অধ্যয়ন করতে সুশৃঙ্খল, অনুপ্রাণিত ও উদ্দিপীত কাউকে (হয়তো আপনি নিজেই) খুঁজুন যিনি গ্রুপের “ডীন” হিসেবে কাজ করবেন। ডীন’এর কর্তব্য হচ্ছে চারটিঃ

  1. গ্রুপে যোগ দেবে এমন লোকজন প্রবেশন করবেন।
  2. গ্রুপ বৈঠকের আয়োজন করবেন।
  3. গ্রুপের সদস্যদের কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকতে প্রেরণা যোগাবেন।
  4. যখন প্রয়োজন হবে তখন গ্রুপের সদস্যদের কোর্সের ব্যপারে সহায়তা করবেন, যেমন কম্পিউটার নিয়ে সাহায্য, ThroughTheScriptures.com-এ অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়া কিংবা আরো অন্য অনলাইন কাজকর্ম।

কার্যক্রমে যোগ দিতে লোকজনকে কিভাবে আগ্রহী করবো?

এ ব্যপারে প্রচার করুন। সমাগমে ঘোষণা দিন এবং ঘোষণাটিকে গীর্জার জ্ঞাপনবোর্ডে, পাওয়ারপয়েন্ট পরিবেশনায় ও গীর্জার ওয়েবসাইটে স্থাপন করুন। লোকজনকে কার্যক্রমে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে সম্ভাব্য আগ্রহীদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলা।

অন্যান্য ধর্মসভার লোকজনের সাথেও যোগাযোগ করুন। সম্ভব হলে প্রতি ধর্মসভায় এমন কাউকে খুঁজে বের করুন যিনি আপনাকে তার ধর্মসভায় এ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার চালাতে সাহায্য করায় আগ্রহী হবে। গীর্জার বাইরের লোকজনকেও আমন্ত্রণ করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। প্রভুর গীর্জার সদস্য নন এমন অনেকেই আছেন যারা এ ধরণের বাইবেল অধ্যয়নে আগ্রহী হতে পারেন, এবং এটি তাদের আপনার সাথে বাইবেল অধ্যয়নকে স্বাচ্ছন্দময় করে তুলতে যথাযথ সুযোগ এনে দিতে পারে।

গীর্জার বয়স্ক সদস্যদের মধ্য থেকে বিশেষ করে বাইবেল অধ্যয়নে আগ্রহী একজনকে খুঁজে বের করুন, এবং তাঁকে নিজের জন্য কোন একটি কোর্স নিতে আমন্ত্রণ করুন। তিনি কোর্সটি সম্পন্ন করার পর হয়তো স্কুল চালু করায় আপনার জন্য সবচেয়ে বড় সমর্থকদের একজন হয়ে দাঁড়াবেন।

ধর্মসভার পক্ষ থেকে তার সদস্যদের মধ্য়ে কার্যক্রমে অংশ নিতে ইচ্ছুক কিছু সদস্য কিংবা সকলের জন্য প্রথম কোর্সটির জন্য অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করতে পারেন। এটি যারা অর্থনৈতিকভাবে বিপন্ন তাদের জন্য সম্ভাব্য কোন বাধা দূর করতে পারবে। ধর্মসভা যারা প্রতিটি কোর্স পূর্বনির্ধারিত কোন গ্রেড নিয়ে পাস করতে পারে তাদের জন্য পরবর্তী কোর্সেরও মূল্য পরিশোধ করা চালিয়ে যেতে পারে, যা অবিরত ও অনলসভাবে বাইবেল অধ্যয়নে অনুপ্রেরণা যোগাবে।


আগ্রহীদের পেয়ে গেলে তারপর কি করবো?

বাইবেলের আলোকে প্রদত্ত যে কোর্সসমূহ গ্রুপের সবাই একসাথে নিতে চান সে ব্যপারে সম্মতি প্রতিষ্ঠা করুন, এবং কোর্স শুরু করার জন্য সবাই মিলে একটি বিশিষ্ট দিন নির্ধারণ করুন যেন আপনারা সবাই মিলে দলবদ্ধ হয়ে অধ্যয়ন করতে পারেন। নিবন্ধনের উপায় ব্যাখ্যা এবং যাদের কোন সমস্যা থাকে তাদের সহায়তা করতে ভুলবেন না।

সপ্তাহিক বৈঠকের আয়োজন করুন। কিছু গ্রুপ গীর্জার কোন উপাসনা অনুষ্ঠানের ঘন্টা খানেক আগে বৈঠকে আসতে পছন্দ করেন। অন্যরা সপ্তাহিক রাত্রে কিংবা অন্য সময়ে আস্তে পছন্দ করেন। এমন একটি সময় নির্ধারণ করার চেষ্টা করুন যা অংশগ্রহণকারীদের জন্য সর্বোত্তম হবে। অবস্থানের ক্ষেত্রেও তাইঃ কেউ কেউ গীর্জায় সম্মিলিত হতে পছন্দ করেন, কেউ আবার সদস্যদের বাসায় কিংবা অন্য কোথাও।


সপ্তাহিক বৈঠকগুলোতে আমরা কি করবো?

সার্বিক লক্ষ্য হলো কোর্সসমুহের জন্য অধ্যয়নে সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান করা। বুঝতে কঠিন এমন বিষয় অনুধাবন করায় সাহায্য করার মাধ্যমে পরীক্ষাসমূহের জন্য প্রস্তুত হতে গাইড বইসমূহ অধ্যয়ন করা উচিত।

অধিকাংশ গ্রুপ এ সময়টির জন্য একটি ভক্তিমূলক বাণী অন্তুরভুক্ত করে, বিশেষত এমন কিছু যা সে সপ্তাহে কোর্সে সবাই মিলে অধ্যয়ন করেছে তা থেকে নেয়া। প্রতি সপ্তায় পালা করে একেক জন ভক্তিমূলক বার্তাটি উপস্থাপন করতে পারেন।

সপ্তাহিক বৈঠকগুলোর মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো সাহচর্য ও অন্তরঙ্গতা উৎসাহিত করা, তাই মাঝেমধ্যে কফি, হাল্কা নাশতা কিংবা হয়তো কোর্স সম্পন্নের পর উদযাপনমূলক ভোজনের মতোও অন্যান্য কর্মকান্ড অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এসব অতিরিক্ত ব্যবস্থাগুলো যেন বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য থেকে আপনাদের মনোযোগ বিনষ্ট না করে কিংবা এমন চাহিদামূলক না হয়ে পড়ে যে কারণে লোকজন কোর্স ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।


এ ধারণাগুলো শুধু মাত্র পরামর্শস্বরূপ। এ কার্যক্রমের সৌন্দর্য হচ্ছে আমরা মূল বিষয়বস্তুসমুহ প্রদান করে থাকি এবং আপনারা আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তা স্থানীয় স্কুলের জন্য যথোপযুক্ত করে পরিবর্তন করে নেবেন।

আমাদের প্রদত্ত কিংবা আপনার নিজের কোন ধারণা কী বিশেষভাবে কোথাও কাজে লেগেছে? আমরা সে ব্যপারে শুনতে আগ্রহী! অনুগ্রহ করে আমাদের প্রতিক্রিয়া পৃষ্ঠা‘র মাধ্যমে জানাবেন।